কাতারে যেতে কত টাকা লাগে


কাতারে যেতে কত টাকা লাগে এই প্রসঙ্গে নিয়ে আমাদের জানাটা দরকার। কারণ বাংলাদেশ থেকে প্রত্যেক বছর হাজার হাজার মানুষ জীবিকার উদ্দেশ্যে কাতার পাড়ি দিয়ে থাকে।কাতারে সাধারণত প্রবাসীদের বেতন বেশি থাকার কারণে জীবিকার উদ্দেশ্যে কাতার গিয়ে থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কাতারে যেতে কত টাকা লাগে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।

কাতারে-যেতে-কত-টাকা-লাগে


আরও পড়ুনঃবাংলাদেশে মাশরুম চাষের পদ্ধতি

পেজ সূচিপত্র ঃ

কাতার যেতে কত টাকা লাগে

আমরা যারা বাংলাদেশী আছি তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়ে থাকে। উচ্চ বেতন এবং পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমরা সাধারণত প্রবাসে জীবন বেছে নিয়ে থাকে। উচ্চ বেতন এবং সুযোগ সুবিধার জন্য কাতার খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রবাসী স্থান। কাতারের শ্রমিকদেরকে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে, সেই সুবাদে অনেক মানুষ কাতারে বিভিন্ন ধরনের ভিসাতে পাড়ি দিয়ে থাকে।

কাতারে যেতে কত টাকা লাগে এই প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা যাক। সাধারণত কাতারে যেতে আপনার ভিসার উপর ডিপেন্ড করে টাকার পরিমাণ হয়ে থাকে। যেমন ধরেন আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় গিয়ে থাকেন তাহলে আপনার খরচ পড়বে ২থেকে ৩ লক্ষ টাকা মত। আর যদি আপনি কাজের ভিসায় যেতে চান তাহলে আপনি খরচ পড়বে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মত।

 আর আপনি যদি নানান ধরনের কোম্পানি হিসেবে যেতে চান তাহলে আপনার খরচ পড়বে মোটামুটি ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মত। এছাড়া যদি আপনি দালালের মাধ্যমে কাতারে যেতে চান তাহলে আপনার খরচ আরো অনেক বেশি হতে পারে। বা কমও হতে পারে, আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

কাতারের ভিসার দাম কত ২০২৫

কাতার যেতে কত টাকা লাগে সেই সম্পর্কে আমরা উপরে জানলাম। এখন আমরা আপনাদের সঙ্গে কাতারের ভিসার দাম কত ২০২৫ অনুসারে সেই সম্পর্কে আলোচনা করব। সাধারনত বাংলাদেশ থেকে কাতার যেতে তেমন একটা বেশি খরচ না হলেও মোটামুটি আয়ত্তের মধ্যে আছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কাতারের ভিসার দাম কত ?

সিরিয়াল নাম্বারঃ ভিসার ধরনঃ আনুমানিক খরচঃ
ট্যুরিস্ট ভিসা ২-৩ লক্ষ টাকা
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ৪-৫ লক্ষ টাকা
রেস্টুরেন্ট ভিসা ৩-৫ লক্ষ টাকা
ড্রাইভিং ভিসা ৫-৬ লক্ষ টাকা
ফ্রি ভিসা ৫-৭ লক্ষ টাকা

কাতারে কোম্পানি ভিসা যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ সাধারণত প্রবাস হাঁটার জন্য অন্যতম একটি দেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির ৮০% আসে প্রবাসীদের কাছ থেকে। বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিষয় প্রবাস কেটে থাকে।
এই দিক থেকে কাতারও ব্যতিক্রম নয় কারণ বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ কাজ করে থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কাতারে কোম্পানি ভেসে যেতে কত টাকা খরচ হয় সেই সম্পর্কে।

বাংলাদেশ থেকে কাতারে ভিসার দাম ক্যাটাগরি অনুযায়ী হয়ে থাকে যেমন ধরেন আপনি যদি কোম্পানি হিসেবে দিতে চান তাহলে আপনার খরচ পড়বে মোটামুটি ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মতো। আর যদি আপনি কৃষি ভিসায় বা অন্যান্য ভেসে যেতে চান তাহলে সেটি বাড়তে পারে বা করতে পারে। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে কাতারের যে কোন কোম্পানি ভেসে যেতে আপনার সর্বোচ্চ খরচ হয় ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মত।

কাতার লেবার ভেসে যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে সাধারণত কাতারে প্রত্যেক বছর হাজার হাজার মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে পরিবারের সুখের আশায় হাজার হাজার শ্রমিক গিয়ে থাকে। কাতারে সাধারণত ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী তার দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কাতারে লেভার বিশেষ সাধারণত দুই থেকে তিন লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে সরকারি মাধ্যম। আর যদি আপনি দালালের মাধ্যমে যেতে চান তাহলে আপনার খরচ পড়বে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মত।
কাতারে-যেতে-কত-টাকা-লাগে


তবে আমার মতে বাংলাদেশ থেকে যদি আপনি কাতারে সলিড ভাবে যেতে চান, তাহলে আপনি সরকারের মাধ্যমে লেবার ভিসায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ পড়বে। আপনি সলিড ভাবে  ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে সরকারের মাধ্যমে কাতারে যাওয়া উচিত। এছাড়া কাতারে আপনি যদি বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে কিংবা দালালের মাধ্যমে যেতে চান তাহলে আপনার খরচটা একটু বেশি হতে পারে বা কম হতে পারে।

কাতারে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আমরা যারা বিভিন্ন দেশে কাজের উদ্দেশ্যে গিয়ে থাকে ।তারা সাধারণত এ বিষয়টি ভালোভাবে জানে দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য আপনার নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। এই দিক দিয়ে কাতারও কোন ব্যতিক্রম নয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক কাতারে যাওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো কি কি?
  • আপনার বৈধ পাসপোর্ট
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি
  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • আপনার মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
  • কোম্পানির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার
  • আপনার ফ্লাইটের টিকিট
  • আপনার ভিসার ফটোকপি
  • আপনার নাগরিক সনত্র
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা সার্টিফিকেট
  • আপনার কাজের দক্ষতা সার্টিফিকেট, ইত্যাদি
কাগজপত্র থাকলে আপনি খুব সহজেই কাতারে যেতে পারবেন। এই কাগজপত্রগুলো থাকাটা বাধ্যতামূলক। কারন এই কাগজপত্রগুলো যদি না থাকে তাহলে আপনি বাংলাদেশের নাগরিক না। আর আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক না হন তাহলে আপনি কিভাবে বাহিরের দেশগুলোতে যাবেন।

কাতারের ভিসা প্রসেসিং

কাতারে ভিসা প্রসেসিং করতে সাধারণত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়. পদক্ষেপ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কাগজ পত্রগুলো সঠিকভাবে রাখা. যেমন ধরেন কাতারের ভিসা প্রসেসিং এর জন্য আপনার পাসপোর্ট এর ফটোকপি প্রয়োজন হয়, পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হয়, ভিসার ফি  পরিশোধ কাগজ , শিক্ষাগত যোগ্যতা সার্টিফিকেট ইত্যাদি কাগজপত্রগুলো প্রসেসিং এর জন্য প্রয়োজন হয়ে থাকে।

এছাড়া কাতারের বিচার আবেদন করার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে যেগুলো কাগজপত্র প্রয়োজন হয় যেমন ধরেনঃ আপনার ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সাবমিট করা। আপনার ভিসার ফি পরিশোধ করার। এগুলো শেষ করার পরে আপনার ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো এজেন্সির কাছে সাবমিট করতে হবে। আপনার কাতার এজেন্সি কাগজপত্র গুলো ভালোভাবে চেক করে আপনার ভিসার জন্য সাবমিট করবে।।

আপনার ভিসার জন্য সাবমিট করার পরে অনলাইনের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। যদি আপনার কাগজপত্র সঠিক থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার কাতারের ভিসা প্রসেসিংয়ের কাজ শেষ করতে পারবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ।

কাতারের রিয়াল বনাম বাংলাদেশের টাকা 

কাতারের রিয়েল বনাম বাংলাদেশের টাকায় কনভার্ট করলে যে পরিমাণ টাকা হয় তা নিয়ে বিস্তারিতভাবে একটি ছক আকারে উপস্থাপন করা হলো:

কাতার রিয়াল পরিমানঃ বাংলাদেশ টাকা পরিমানঃ
কাতার রিয়াল = 1 রিয়াল বাংলাদেশি টাকা = 33.49 টাকা
কাতার রিয়াল = 10 রিয়াল বাংলাদেশি টাকা = 334.85 টাকা
কাতার রিয়াল = 100রিয়াল বাংলাদেশি টাকা = 3348.52 টাকা
কাতার রিয়াল = 500 রিয়াল বাংলাদেশি টাকা = 16742.58 টাকা
কাতার রিয়াল = 1000 রিয়াল বাংলাদেশি টাকা = 33485.15 টাকা
কাতার রিয়াল = 10000 রিয়াল বাংলাদেশি টাকা = 334851.51 টাকা
কাতার রিয়াল = 500000 রিয়াল বাংলাদেশি টাকা = 16742575.41 টাকা

ঢাকা থেকে কাতারের বিমান ভাড়া

উপরে কাতারে যেতে কত টাকা লাগে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও কাতারে যেতে কোন কোন ধাপে কি কি পরিমান টাকা খরচ হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। শুধুমাত্র হেঁটে হেঁটে আর যাওয়া যায় না কাতারে যেতে হলে ফ্লাইটের মাধ্যমে যেতে হয়। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে কাতার যেতে সর্বনিম্ন খরচ যেটা হয় সেটা হল ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিমান ভাড়া হয়ে থাকে।

এছাড়াও ফ্লাইটের ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। যেমন ধরেন আপনি ভিআইপি কেবিনে করে গেলে আপনার খরচ পড়বে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত। এছাড়াও আপনি যদি ইকোনমি লেভেলে যেতে চান তাহলে আপনার খরচ পড়বে ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার মত প্রায়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ।

কাতারের ভিসার ক্যাটাগরি

বাংলাদেশী প্রবাসীদের জন্য কাতারের ভিসার ক্যাটাগরি কয়েকটি ধাপে নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন ধরেন কাতারে ভিসা গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্টুডেন্ট ভিসা। প্রত্যেক বছর হাজার হাজার স্টুডেন্ট কাতারে পড়াশোনা করতে যায়। এছাড়াও কাতারের ভিসা গ্রহের মধ্যে কয়েকটি ধাপে নির্ধারণ করা হয়েছে, ধাপগুলো হলোঃ
  • স্টুডেন্ট ভিসা
  • শ্রমিক ভিসা
  • কৃষি ভিসা
  • ডাইভিং ভিসা
  • টুরিস্ট ভিসা
  • রেস্টুরেন্ট ভিসা
  • ফ্রি ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • চিকিৎসা ভিসা, ইত্যাদি অন্যতম।
কাতারে যাওয়ার জন্য আপনার এই ধরনের ভিসার ক্যাটাগরি হয়ে থাকে। আপনাকে যাওয়ার জন্য এর মধ্যে থেকে যে কোন একটি ভিসা বেছে নিতে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজে কাতারে যেতে পারবেন।

উপসংহারঃ

পরিশেষে বলা যায় যে, কাতারে যেতে কত টাকা লাগে সেই বিষয়ে ভালোভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও কাতারের ভিসার ক্যাটাগরি ও কাতারে যেতে বিমান ভাড়া কত টাকা হতে পারে সে সম্পর্কে ভালো আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া কাতারে কোন কোন ভিসায় যেতে পারবেন এবং কাতারের টাকার রেট কত তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

সাধারণত বাংলাদেশ থেকে কাতারে উচ্চ বেতন এবং নানান ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশীরা কাতারে কাজের উদ্দেশ্যে গিয়ে থাকে। বাংলাদেশ সাধারণত প্রবাসীদের উপর 80% নির্ভর  তাদের অর্থনীতি।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url