গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি

গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি বিষয় নিয়ে আজকের এই পোস্ট টি লেখা হয়েছে। তাছাড়া জানতে পারবেন গাঁদা ফুল চাষ করার উপযুক্ত জায়গা ও উন্নতমানের বীজ সম্পর্কে। আপনিও গাধা ফুল চাষ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন। এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে আজকের এই পোস্টটি লেখা হয়েছে।
গাঁদা-ফুল-চাষের-পদ্ধতি


পেজ সূচিপত্রঃ

গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি

গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে আলোচনা করা হবে। গাঁদা ফুল চাষ করার সময় আগে আপনাকে একটি জমি নির্বাচন করতে হবে। যেখানে আপনি গাঁদা ফুল চাষ করবেন। জমিটি ভালোভাবে চার থেকে পাঁচ বার চাষ করে নিতে হবে ডাক্তার অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে। তারপর জমিটা ভালোভাবে চাষ করার পরে জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সার প্রয়োগ করতে হবে।

জমিতে সার প্রয়োগ করার মাধ্যমে জমির উর্বরতা ও শক্তি বৃদ্ধি পায়। তারপরে জমিতে গাঁদা ফুলের চারা রোপন করতে হবে। চারা রোপণ করার পরে চারাগুলো ভালোভাবে পরিচর্যা করতে হবে। পরিচর্যা করার মাধ্যমে খেয়াল রাখতে হবে জমিতে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে সার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি দেওয়া হয়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং সার প্রয়োগ করা না হয় তাহলে জমির শক্তি কমে যাবে।

গাঁদা ফুল চাষ করা খুবই সহজ একটি মাধ্যম। কারণ আপনি গাঁদা ফুলের পাশাপাশি অন্যান্য ফুলে চাষ করতে পারবেন। বাজারে গাঁদা ফুলের চাহিদা থাকার কারণে আপনি সীমিত আকারে চাষ করার মাধ্যমে অধিক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। শুধুমাত্র আপনার সঠিক পরিচর্যা ও উন্নতমানের বীজের রোপন করার মাধ্যমে আপনি অনেক লাভবান হতে পারবেন।

গাঁদা ফুলের চারা একবার রোপন করার মাধ্যমে আপনি ওই ফুল থেকে গাঁদা ফুলের সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন। আপনি ওই বীজ সংগ্রহ করে পরবর্তী সময় আপনি বীজগুলো বিক্রি করতে পারবেন এবং পরবর্তী সময় চারা রোপণ করে লাগাতে পারবেন। এটি হলো গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতিআশা করি বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ। 

টবে গাঁদা ফুলের চাষ পদ্ধতি

প্রায় সময় দেখতে পাওয়া যায় অনেকে বাড়িতে টবে গাঁদা ফুল চাষ করে থাকে। গাঁদা ফুল সাধারণত দেখতে অনেকটা সুন্দর হওয়ার কারণে এই ফুলটি সবাই শখের বসে নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় চাষ করে থাকে। তবে গাঁদা ফুল চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো। সর্বপ্রথম আপনাকে বাজার থেকে একটি টব কিনে আনতে হবে। তারপর আপনাকে উর্বর মাটি সংগ্রহ করতে হবে।

আপনার উর্বর মাটি সংগ্রহ করার পরে আপনি টবে ওই মাটিগুলো দিয়ে ভরাট করে দিবেন। এবং তার সাথে কিছু জৈব সার মিক্সড করে নিতে হবে। এতে করে ওই মাটিগুলো শক্তি বৃদ্ধি পাবে। মাটির শক্তি বৃদ্ধি হওয়ার ফলে আপনার গাঁদা ফুলের গাছটি অতি তাড়াতাড়ি বড় হবে। তারপরে আপনি গাঁদা ফুলের চারা টপটিতে লাগিয়ে দিবেন। তবে লাগানোর পরে সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে গাধা পড়লে চারাটি আস্তে আস্তে বড় হয়ে যাবে। এভাবে আপনি আপনার বাড়ির আঙ্গিনায় অথবা ছাদে টবের মাধ্যমে গাঁদা ফুলের চাষ করতে পারেন।

গাঁদা ফুলের বীজ থেকে চারা তৈরি

গাঁদা ফুলের বীজ থেকে চারা তৈরি করা তেমন একটা কঠিন কাজ নয়। গাঁদা ফুল থেকে চারা তৈরি করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে গাঁদা ফুলকে একবারে পরিপূর্ণভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। গাঁদা ফুল শুকানো শেষ হলে ওই ফুলগুলোকে আপনি সংগ্রহ করে রাখতে হবে। যাতে করে ওই ফুলগুলো থেকে যে বীজগুলোপাওয়া যাবে ওই বীজগুলো থেকে পরবর্তী সময়ে তাড়াতাড়ি করা যায়।

তার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম টি জমি প্রস্তুত করতে হবে যেখানে আপনি বীজগুলো রোপণ করার মাধ্যমে চারা পাবেন। জমি প্রস্তুত করা শেষ হলে তার ওপরে কিছু কীটনাশক এবং জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। জৈব সার দেওয়া শেষ হলে সুন্দর করে আপনার কাছে থাকা বীজগুলো ওই জমিতে রোপন করতে হবে। বীজ রোপন করার ৫থেকে ৬ দিন পরে বীজ ফেটে চারা বের হবে।

এভাবেই আপনি খুব সহজে গাঁদা ফুলের বীজ থেকে চারা সংগ্রহ করতে পারেন। এবং ওই চারাগুলো বাজারে বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন। বীজ থেকে চারা সংগ্রহ করে আপনি পরবর্তী সময়ে গাঁদা ফুলের বাগান তৈরি করতে পারেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ধন্যবাদ।

গাঁদা ফুলের বীজ বপনের সময়

বর্তমান সময়ে গাঁদা ফুলের বীজ গোপনের উপযুক্ত কোন সময় নেই সারা বছরই আপনি গাঁদা ফুলের বীজ রোপন করতে পারেন। কিন্তু গাঁদা ফুলের বীজ রোপন করার উপযুক্ত সময় হল শীতকাল। তথা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে অক্টোবর পর্যন্ত গাঁদা ফুলের বীজ রোপন করা উপযুক্ত একটি সময়। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ সারা বছরই গাঁদা ফুলের বীজ রোপন করা হয়।

বাজারে গাঁদা ফুলের চাহিদা থাকার কারণে প্রত্যেক বছর গাঁদা ফুলের বিদ্রোপণ করা হয়ে থাকে। গাঁদা ফুল সাধারণত কোন ধরনের অনুষ্ঠান, বিয়ের বাড়ির অনুষ্ঠান, স্কুল কলেজের বিদায় অনুষ্ঠান, ইত্যাদি কাজে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই বছরে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গাঁদা ফুল বাজারে দেখতে পাওয়া যায়। আমার জানামতে সাধারণত গাঁদা ফুল বীজ রোপনের উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল।

গাঁদা ফুলের বীজ কোথায় পাওয়া যায়

বাজারে সারা বছর গাঁদা ফুলের চাহিদা থাকার কারণে বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে গাঁদা ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে। এই বাগান থেকে গাঁদা ফুল বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে অনেকজন লাভবান হচ্ছে। এখন কথা হল গাঁদা ফুলের বিচি কোথায় পাওয়া যাই। গাঁদা ফুলের বীজ সাধারণত নার্সারি, অনলাইন বিল বিক্রেত, এছাড়াও যারা সখের বসে নিজের বাড়ি আঙ্গিনায় গাধা হলো চাষ করে থাকে তারা গাঁদা ফুলের সংগ্রহ করে রাখে।

আপনি যদি গাঁদা ফুলের চাষ করতে চান তাহলে এদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে বাগান তৈরি করতে পারেন। তাছাড়া আপনি নার্সারি থেকে গাঁদা ফুলের চারা সংগ্রহ করে গাঁদা ফুলের চাষ করতে পারেন। পরবর্তী সময়ে আপনি নিজেই নিজের বাগান থেকে গাঁদা ফুলের বীজ সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন। পরবর্তী সময়ে সে বীজগুলো আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বা দোকানের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারবেন।

গাঁদা ফুল গাছের পরিচর্যা

আপনি যদি গাধা ফুলের গাছের পরিচর্যা না করতে পারেন তাহলে আপনার ফুলের গাছ থেকে আপনি যে রকম ফুল পেতে চান ঠিক সেরকম ফুল পাবেন না। তার জন্য আপনাকে সঠিক নিয়মে পরিচর্যা করতে হবে। আপনি যদি সঠিক নিয়মে পরিচর্যা করতে পারেন তাহলে আপনি বাগান থেকে ফুল বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।
গাঁদা-ফুল-চাষের-পদ্ধতি



বর্তমান সময় বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে গাঁদা ফুলের চাষ করা হয়ে থাকে। তারা সঠিক নিয়মে চাষ এবং পরিচর্যা করার মাধ্যমে ভালো ফলাফল পায়। গাঁদা ফুলের গাছ পরিচালক পরিচা করার নিয়ম হলোঃ
  • গাঁদা ফুলের গাছে সময়মতো পানি দিতে হবে।
  • গাঁদা ফুলের গাছে সময়মতো কীটনাশক সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • দেখতে হবে গাঁদা ফুলের জমিতে যেন পানি বেঁধে না থাকে।
  • সঠিক সময় গাঁদা ফুলগুলো তুলে সংগ্রহ করতে হবে।
  • অতিরিক্ত লাভের আশায় কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবে না।
  • গাঁদা ফুলের জমি উর্বরতা ও জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে বেশি বেশি করে।

গাঁদা ফুলের কয়টি জাত আছে বাংলাদেশে

আমাদের বাংলাদেশের সাধারণত গাঁদা ফুলের দুইটি জাত বেশি পরিমাণে দেখতে পাওয়া যায় এর মধ্যে প্রথমটি হল আফ্রিকান গাধা ফুল ও অপরটি হল ফরাসি গাঁদা ফুল। আফ্রিকান গাধা ফুল এবং ফরাসি গাঁদা ফুল এই দুইটি জাতের মধ্যে আবার কিছু পার্থক্য রয়েছে পার্থক্যগুলো হলোঃ

আফ্রিকান গাধা ফুলঃ

আফ্রিকান গাঁদা ফুল গুলোর মধ্যে ইনকা, গিনি গোল্ড, ইয়েলা সুপ্রিম, ম্যান ইন দি মুন, গোল মিক্স ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

ফরাসি গাঁদা ফুলঃ

ফরাসি গাঁদা ফুল গুলোর মধ্যে মেরিএটা, হরমনি, লিজন অব আনার ইত্যাদি ফরাসি কাদা ফুল গুলোর মধ্যে অন্যতম।
এছাড়া বাংলাদেশের যেগুলো গাধা ফুল চাষ করা হয়ে থাকে। বা সচরাচর দেখা যায় সেগুলোর নাম হলঃ সাদা গাধা ফুল, জাম্বুগাধা ফুল, রক্ত বা চাইনিজ ফুল এই ধরনের গাঁদা ফুলের জাত বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়ে থাকে।

গাঁদা ফুল চাষের পাশাপাশি অন্যান্য ফুলের চাষ

বাংলাদেশ সাধারণত কৃষি প্রধান একটি দেশ। বাংলাদেশের কৃষকেরা আমাদের পাশাপাশি নতুন কিছু চাষাবাদ করার জন্য আগ্রহ দেখিয়ে থাকে। আপনি চাইলে গাধা ফুল চাষের পাশাপাশি অন্য ফুলের যাতে চাষ করতে পারেন। এতে করে আপনার একটি জমিতে দুই ধরনের ফুলের চাষ করে আপনি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেন। কারণ একই সার বিষএবং পানি দিয়ে আর একটা ফুলের চাষ একই সাথে হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে গাঁদা ফুলের পাশাপাশি গোলাপ ফুল, রজনীগন্ধা ফুল, চন্দ্রমল্লিকা ফুল, যার বেড়া ইত্যাদি ধরনের ফুলের চাষ করে আপনি অর্থনৈতিকভাবে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারেন। কারণ বাংলাদেশের মাটি এই ধরনের ফুল চাষ করার জন্য খুবই উপযুক্ত। তাছাড়া এই ধরনের ফুল আপনি বাইরের দেশে এক্সপোর্ট করে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গাঁদা ফুলের পাশাপাশি গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, জারবেড়া, রজনীগন্ধা, আরো অন্যান্য জাতের ফুলের চাষ করতে পারবেন। ফুল চাষ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমান সময়ে বিশাল একটি প্রভাব ফেলে থাকে। তাছাড়া ধর্মীয় সামাজিক এবং পারিবারিক অনুষ্ঠানে প্রচুর পরিমাণে ফুলের প্রয়োজন হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। তাছাড়া গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা জরুরি আমাদের।

গাঁদা ফুল কখন ফোটে

গাঁদা ফুল সাধারণত শীতকালের দিকে ফুটে থাকে। গাঁদা ফুলের গন্ধ অনেক মিষ্টি টাইপের হওয়ার কারণে বাংলাদেশের কম বেশি ভাই প্রত্যেকটি বাড়িতে ছোটখাটো বাগান করে থাকে গাঁদা ফুলের। তাছাড়া আপনি যদি সঠিক যত্ন এবং সঠিক মাধ্যমে গাঁদা ফুলের গাছ লাগাতে পারেন তাহলে শুধু শীত নয় শরৎ বসন্ত হেমন্ত গ্রীষ্ম প্রায় ১২মাসই গাঁদা ফুল ফুটবে।

তাছাড়া গাঁধা ফুলের সারা বছর চাহিদা থাকার কারণে কৃত্রিম পদ্ধতিতে বা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যম দিয়ে গাধা ফুলের চাষ করা হয়ে থাকছে। এই উন্নত প্রযুক্তির চাষ করার মাধ্যমে সারা বছরই গাঁদা ফুল ফুটে থাকে। এছাড়া গাঁদা ফুলে সামাজিক পারিবারিক ও রাজনৈতিক বা ধর্মীয় সকল ক্ষেত্রেই কম বেশি প্রয়োজন হয়ে থাকে। এটির বাজার মূল্য খুব ভালো পাওয়া যায়। গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি জানলে সারা বছরই গাঁদা ফুল পাওয়া যায়।

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায় য, গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া গাঁদা ফুল বছরের কোন সময় ফোটে সেই সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। আর আপনি চাইলে গাধা ফুলের অনেক কতগুলো জাত রয়েছে । এর মধ্যে থেকে যেকোনো একটি জাত যাচাই করে চাষ করতে পারেন। তাছাড়া গাধা ফুল চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন। গাঁদা ফুল চাষের পদ্ধতি বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এই পোস্টের মাধ্যমে ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url